খুলনা বিভাগের ৩ দর্শনীয় স্থান
বাংলাদেশের ৩য় বৃহত্তর বিভাগ খুলনা। পর্যটনের অপার সম্ভাবনা নিয়ে প্রকৃতি নিজ হাতে সাজিয়েছে এই বিভাগকে। ইউনেস্কো ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তালিকায় থাকা ২টি স্থান রয়েছে এই খুলনা বিভাগেই।
চলুন দেখে নেওয়া যাক খুলনা বিভাগের সেরা ৩ স্থান।
ষাট গম্বুজ মসজিদ
খুলনার বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত ষাট গম্বুজ মসজিদ ১৫শ শতকে নির্মিত এক প্রাচীন মসজিদ। নাম ষাট গম্বুজ হলেও মসজিদের গম্বুজ সংখ্যা মোট ৮১টি। চুন, সুড়কি আর লাল ইটে নির্মিত এই মসজিদ মধ্যযুগের স্থাপত্যের নিদর্শন হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। মসজিদের আশে পাশে প্রচুর খোলা জায়গা আছে। রয়েছে বাগান, বিশাল দিঘী এবং নামাজের স্থান, যেখানে প্রায় ৩০০০ জন একসাথে নামাজ পড়তে পারেন। চমৎকার স্থাপত্যশৈলীর জন্য ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ষাট গম্বুজ মসজিদ-কে।
কিভাবে যাবেন?
ষাট গম্বুজ মসজিদ যেতে হলে আপনাকে আসতে হবে বাগেরহাট শহরে। এসি বা নন এসি বাসে চড়ে চলে আসতে পারেন বাগেরহাট। এরপর অটো বা রিকশা নিয়ে ষাট গম্বুজ মসজিদ।
লালন শাহের মাজার
আধ্যাত্মিক সাধক ফকির লালন শাহের মৃত্যুর পর সমাহিত করা হয় কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায়। এখানেই তার শিষ্যরা গড়ে তোলে মাজার। বর্তমানে এখানে বসে বাউলদের আসর। লালনের জন্ম আর মৃত্যু বার্ষিকীতে প্রতিবছর হয় লালন মেলা। দোল পূর্ণিমায় আর পহেলা কার্তিকে অনুষ্ঠিত ৩দিন ব্যাপী চলা মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লালন ভক্তরা সমবেত হয় এখানে। লালনের মাজারের বিরাট ফটক পেরোলেই দেখা যায় লালন শাহের আবক্ষ মূর্তি। পাশেই রয়েছে মিউজিয়াম। লালন আর তার শিষ্যদের ব্যবহার্য বিভিন্ন জিনিস সংরক্ষিত রয়েছে এখানে।
কিভাবে যাবেন?
লালন শাহের মাজার দেখতে আপনাকে আসতে হবে কুষ্টিয়া। বিভিন্ন বাসে করে কুষ্টিয়ার মজমপুরে নেমে সেখান থেকে অটোতে করে চলে আসতে পারেন লালনের এই আখড়াতে। বাস টিকেট অনলাইনে পাবেন সহজ থেকেই।
সুন্দরবন
বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন তার অপার্থিব সৌন্দর্য নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে। পর্যটকদের জন্য বনের সর্বত্র চলাচলের অনুমতি না থাকলেও, সুন্দরবনে বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে ঘোরা যায় বেশ কয়েকটি পয়েন্টে। তার মধ্যে রয়েছে করমজল, হাড়বাড়িয়া, কটকা, কচিখালি, জামতলা, দুবলার চর আর হিরণ পয়েন্ট। রাসমেলার সময় অসংখ্য দর্শনার্থীদের পদচারণায় সরগরম হয়ে উঠে সুন্দরবন। তবে সুন্দরবন ভ্রমণের উপযুক্ত সময় নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস। হরিণ, কুমির আর কপাল ভালো থাকলে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সাথেও দেখা হয়ে যেতে পারে এখানে। জীব বৈচিত্র্য আর লবনাক্ত পানিতে বেড়ে উঠা বিভিন্ন উদ্ভিদের বিস্তীর্ণ এই বনকে ইউনেস্কো ১৯৯৭ সালে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় স্থান দেয়।
কিভাবে যাবেন?
খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা আর বরগুনা জুড়ে সুন্দরবন বিস্তৃত হলেও, পর্যটকরা খুলনা বা মংলা দিয়ে সুন্দরবন যান। এজন্য ঢাকা থেকে আপনাকে বাসে খুলনা বা মংলা চলে আসতে হবে।
নিরাপদে এবং কম খরচে ঝামেলা এড়িয়ে সুন্দরবন ঘুরে দেখতে হলে আপনাকে নির্ভরযোগ্য ট্যুর অপারেটরের সহায়তা নিতে হবে। তাছাড়া ৫-৭ জনের বড় গ্রুপ নিয়ে নিজেরা ঘুরতে চাইলে বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে ঘুরতে হবে।