প্রতি বছরের মতো এবারও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পুণ্যোৎসবরাস পূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নানঅনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছেআগামী ৬-৮ নভেম্বর এই পূজা চলবে দুবলার চরের আলোর কোল-এ। বহুবছর যাবত রাস পূজা উপলক্ষ্যে রাস মেলা চললেও গত ২ বছর যাবত তা বন্ধ রয়েছেবন, বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় রাস মেলা ও উৎসব স্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়েছেতবে নিয়ম মেনে পূজা ও পূণ্যস্নান চলবে আগের মতোই।  

 

 

রাস পূর্ণিমা পূজার ইতিহাস  

স্থানীয়রা বিশ্বাস করেন, প্রায় ২০০ বছর আগে সাধক হরি ঠাকুর স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে দুবলার চরে এই পূজা প্রবর্তন করেনপরবর্তীতে তার অনুসারীরা দেবতা নীল কমল ও গঙ্গা দেবির উদ্দেশ্যে পূজা করা শুরু করেন।  এরপর থেকে প্রতি বছর কার্তিক মাসের শেষ অগ্রহায়ণের শুক্লপক্ষের পূর্ণিমায় সুন্দরবনের দুবলা চরে রাস পূজা হয়পাপ মুক্তি আর জীবনের বিভিন্ন কামনা পূরণের জন্য সনাতন ধর্মালম্বীরা পূণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে এই পূজা সম্পন্ন করেন।  

দুবলার চরের অবস্থান 

বাগেরহাটের মংলা বন্দর থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দক্ষিণে দুবলার চর অবস্থিতপ্রায় ৮১ বর্গমাইলের এই চরটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল। এলাকাটি সমুদ্রতীরবর্তী হওয়ায় এখানকার মানুষ সমুদ্র থেকে মাছ ধরে এবং প্রক্রিয়াজাত করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।  

দুবলার চরের রাস পূর্ণিমা পূজায়  কিভাবে যাবেন? 

দুবলার চর যেতে হলে আপনাকে আসতে হবে খুলনা, বাগেরহাট বা সাতক্ষীরাদেশের যেকোনো জায়গা থেকে এখানে আসতে পারেন বাসে বা ট্রেনেঅনলাইনে বাসের টিকেট কেটে যেকোনো সময় চলে আসতে পারেন এখানেএরপর অনুমোদিত যেকোনো রুটে বোটে করে চলে যেতে পারবেন দুবলার চরে।   

২০২২ সালে রাস পূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নান যেতে অনুমোদিত ৫ টি রুটের মধ্যে রয়েছে বুড়িগোয়ালিনী-কোবাদক থেকে বাটুলা নদী হয়ে বল নদী ও পাটকোষ্টা খাল দিয়ে হংসরাজ নদী হয়ে দুবলার চরতাছাড়া কয়রা, কাশিয়াবাদ, খাসিটানা, বজবজা হয়ে আড়ুয়া শিবসা, এরপর শিবসা নদী-মরজাত হয়ে দুবলার চর আসতে পারেনআরও রুটের মধ্যে রয়েছেনলিয়ান স্টেশন হয়ে শিবসা-মরজাত নদী হয়ে দুবলার চর, ঢাংমারী অথবা চাঁদপাই স্টেশন-তিনকোনা দ্বীপ হয়ে দুবলার চর এবং বগী-বলেশ্বর-সুপতি-কচিখালী-শেলার চর হয়ে দুবলার চর আসার ব্যবস্থা 

পূজা আর পূণ্যস্নান সম্পন্ন করে আপনি চাইলে ঘুরে আসতে পারেন সুন্দরবনের এদিক-সেদিকওপুরো সুন্দরবন না দেখতে পারলেও আপনি চাইলে ১ দিনে সুন্দরবন বা খুলনার বিশেষ জায়গাগুলো ঘুরে দেখতে পারেন কম খরচেই