একদিনের ছুটিতে আপনার জন্য সেরা ভ্রমণের জায়গা হতে পারে নাটোরের রাজবাড়ী। নাটোর শহরের অনিন্দ্য সুন্দর এই স্থাপত্য নির্মাণ কৌশলের জন্য পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। রাজবাড়ীর পাশেই রয়েছে উত্তরা গণভবন। এই ভবনটি বর্তমানে সরকারি স্থানীয় কার্যালয় এবং বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে চাইলে এই ভবন পরিদর্শন করতে পারবেন। এই ভবনের চারতলা প্রবেশদ্বারে রয়েছে বিখ্যাত কোক এ্যান্ড টেল্ভি কম্পানির বড় ঘড়ি। প্রাসাদের ভেতরে রাজার সিংহাসন, ঢাল-তলোয়ার দেখতে পাওয়া যায়। রাজপাসাদের বাইরের দিক মনোরম বাগানে গাছগাছালি দিয়ে সুসজ্জিত। তাছাড়াও পুরো এলাকায় দেখতে পাবেন রাজা প্রসন্ননাথের আবক্ষ মূর্তি, দয়ারামের মূর্তি, কামান, কুমার ভবন আর অতিথশালাও।
সারাদিন রাজবাড়ী ঘুরে দেখতে পারেন নাটোরের অন্যান্য দর্শনীয় স্থান, চেখে দেখতে পারেন এই এলাকার বিখ্যাত সব খাবার। চলনবিলের টাটকা মাছ আর নাটোরের কাঁচাগোল্লা খেয়ে চাইলে নিয়েও আসতে পারেন। সব মিলিয়ে ছুটির একটা দিন চমৎকার কাটবে শান্তিময় এই এলাকায়।
রাজবাড়ির ইতিহাস
তৎকালীন পুঠিয়ার রাজা দর্পনারায়নের কাছ থেকে রাজা রাম জীবন দান হিসেবে পেয়েছিলেন ১৮০ একর বিল। পরবর্তীতে ১৭০৬ থেকে ১৭১০ সালের মধ্যে তিনি সেখানে রাজবাড়ী এবং অন্যান্য স্থাপনা গড়ে তোলেন। রাণী ভবানীর এই রাজবাড়ি দুইটি অংশে বিভক্ত- বড় তরফ আর ছোট তরফ। বড় তরফ অংশটির মূল কমপ্লেক্সই রাণী ভবানীর রাজবাড়ী হিসেবে ব্যবহৃত হত।
পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ সরকার রাণী ভবানীর রাজবাড়ী-কে রাণী ভবানী কেন্দ্রীয় পার্ক হিসেবে ঘোষণা করে। সপ্তাদশ শতকে নির্মিত এই স্থাপত্যের মধ্যে রয়েছে ৬টি দীঘি। তাছাড়াও শ্যামসুন্দর, তারকেশ্বর শিব এবং আনন্দময়ী কালিমন্দির নামে ৩টি বড় মন্দির রয়েছে। এককালে এই মন্দিরগুলোতে ধুমধাম করে বড় আকারের পূজা অর্চনা চলত। কালের আবর্তে পূজা না হলেও চমৎকার নির্মান স্থাপত্য নিয়ে জানান দিচ্ছে প্রাচীন চাকচিক্য।
কখন খোলা?
নাটোরের রাজবাড়ী খোলা থাকে সকাল ৯ টা থেকে ৬টা পর্যন্ত। প্রতি রবিবার বন্ধ থাকে উত্তরা গণভবন। প্রবেশ করতে হলে জনপ্রতি
কিভাবে যাবেন?
রাণী ভবানীর রাজবাড়ি দেখতে হলে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে আপনাকে প্রথমেই আসতে হবে নাটোর। হানিফ, শ্যামলি, দেশ, ন্যাশনাল সহ বিভিন্ন বাস অপারেটরের বাস চলে এই রুটে। কাউন্টার বা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে সরাসরি বাস টিকেট কিনে চলে আসতে পারেন নাটোর। নন এসি বাসে ৫৫০-৭৫০ টাকা এবং এসি বাসে ৮০০-১১০০ টাকা ভাড়া লাগতে পারে।
তাছাড়া ট্রেনেও নাটোর আসার ব্যবস্থা রয়েছে।
কোথায় থাকবেন?
থাকার জন্য নাটোরে বেশ কিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে। মাত্র ৩০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকায় অনায়াসে থাকতে পারবেন বেশ আরামেই। তাই যদি থাকতে চান নাটোরে রয়েছে তার ব্যবস্থাও।
অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
নাটোরের রাজবাড়ী ছাড়াও এখানে দেখতে পারেন চলন বিল, হালতি বিল। শীতের অতিথি পাখির দেখা পাবেন এখানে। তাছাড়া দয়ারামপুর জমিদারবাড়ি, লালপুরের পদ্মার চর, ধরাইল জমিদারবাড়িও ঘুরে দেখতে পারেন।