মিজোরাম পাহাড়ের কোলে অবস্থিত সাজেক ভ্যালি প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক আকর্ষণীয় স্থান। খাগড়াছড়ি থেকে প্রায় ৭৩ কিলোমিটার দূরে সাজেকের অবস্থান। সারি সারি পাহাড়রাশি আর সাদা সাদা ধোঁয়ার মতো মেঘে ডুবে ডুবে অবসর কাটাতে চাইলে আপনার জন্য সেরা জায়গা হতে পারে সাজেক ভ্যালি। পরিবার বা বন্ধু-বান্ধব এমনকি একা চমৎকার কিছু সময় কাটাতে পারেন এখানে।
সাজেক ভ্যালির দর্শনীয় স্থান
প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য স্বর্গরাজ্য সাজেক। এখানে আপনি দেখতে পাবেন লুসাই পাড়া, রুইলুই পাড়া, রক গার্ডেন। সাজেকের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল কংলাক। এটি সাজেকের সবচেয়ে উঁচু স্থান। এখান থেকে এক নজরে দেখে নিতে পারবেন পুরো সাজেক ভ্যালি। বৃষ্টিভেজা দিনে এখান থেকে দেখতে পারেন দিগন্তে ভেসে উঠা রংধনু। কংলাক যেতে হলে আপনাকে ৪০ মিনিটের মতো ট্রেকিং করতে হবে।
সাজেকের নিচের দিকে একটা ঝর্ণাও আছে। স্থানীয় ভাষায় এই ঝর্ণার নাম সিকাম তৈসা বা পিদাম তৈসা। রুইলুই পাড়া থেকে মাত্র ৪ ঘন্টা ট্রেকিং করলেই উপভোগ করতে পারবেন এই ঝর্ণা।
দিনশেষে সূর্যাস্তের অপার্থিব সৌন্দর্য দেখে রাতের স্বপ্নালু সাজেক দেখতে তৈরি হয়ে নিন। আকাশ ভর্তি কয়েকশ কোটি তারা দেখেছেন কবে? সাজেকের রাতে দেখতে পাবেন লক্ষাধিক তারা। খোলা আকাশে মাঠে কিংবা হ্যালিপ্যাডে গা এলিয়ে উপভোগ করুন নক্ষত্রের রাত।
সারারাত ঘুমিয়ে যদি খুব সকালে না উঠতে পারেন তাহলে সাজেক ট্যুরের বড় মজা মিস করবেন আপনি। সকাল ৫টায় মেঘের ভেতর থেকে সূর্যোদয় দেখার সাথে সাথে পেজা তুলার মতো মেঘের ছুটোছুটি দেখবেন। সকালে প্রতি মুহূর্তে সাজেকের আকাশ রঙ বদলায়। সারা জীবনের সুন্দর কিছু মুহূর্তের সাক্ষী হবেন সকালে।
কিভাবে আসবেন সাজেক?
সাজেক ভ্যালি আসতে হলে প্রথমেই আপনাকে আসতে হবে খাগড়াছড়ি। ঢাকা থেকে হানিফ, শ্যামলি, এস আলম, সৌদিয়া ও শান্তি পরিবহনের বাস চলাচল করে। তাছাড়া খাগড়াছড়ি আসার এসি বাসও রয়েছে সেন্টমার্টিন হুন্দাই রবি এক্সপ্রেস, হানিফ ইত্যাদি। কাউন্টার ছাড়াও অনলাইনে এখন ঘরে বসেই দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে খাগড়াছড়ির বাস টিকেট পাবেন সহজ-এ। ভাড়া বাস ভেদে ৬৫০-১২০০+ হতে পারে।
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। শহরের শাপলা চত্বর থেকে চান্দের গাড়ি বা রিজার্ভ গাড়িতে করে সাজেক ভ্যালিতে চলে যেতে পারেন। আবার খাগড়াছড়ি থেকে আসতে পারেন দীঘিনালায়। এখানে আর্মি এসকর্ট এর সময় সকাল ৯.৩০টায় এবং দুপুর ২.৩০ আপনি যদি দুপুরের এসকর্ট মিস করেন তাহলে পরের দিন সকালের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
সাজেক ভ্রমণের উপযুক্ত সময়
জুলাই থেকে নভেম্বর সাজেক ভ্রমণের সেরা সময়। এই সময় আকাশ পরিষ্কার থাকে এবং স্বচ্ছ মেঘ দেখা যায়। তাছাড়া শীতের সময় সাজেকে থাকে অনন্য রূপ, তাই চাইলে শীতেও সাজেক ঘুরতে পারেন।