জনসচেতনতায় সহজ পরিবার
বর্তমানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি টপিক করোনাভাইরাস। ভাইরাসটির আরেক নাম COVID-19 বা নভেল করোনাভাইরাস। ইতিমধ্যে ভাইরাসটি চীন, ইতালী, ইরান ও বিশ্বের অধিকাংশ দেশে ছড়িয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশেও আঘাত হেনেছে।
তবে আতঙ্ক নয়, শুধুমাত্র সচেতনতামূলক কার্যক্রমই পারে করোনার ভয়াবহতা কিছুটা হলেও রোধ করতে। তাই ভীত না হয়ে, দেখে নিন নিজেকে ও আপনজনকে ঝুঁকিমুক্ত রাখার সহজ কিছু উপায়ঃ
করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে প্রথমেই সচেতন হতে হবে। কোন গুজবে কান দেয়া যাবে না। যেকোন তথ্য সব সময় নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে যাচাই করে নিবেন। আর যা যা করতে পারেন-
১। হাত পরিষ্কারে অবশ্যই হ্যান্ড রাব কিংবা সাবান ব্যবহার করুন।
২। সর্দি-কাশি, জ্বর, মাথা ব্যথা কিংবা শ্বাসকষ্ট হলে অবশ্যই অন্যদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন ও ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৩। সর্দি-কাশির সময়ে টিস্যু দিয়ে নাক-মুখ ঢাকুন।
৪। টিস্যু ব্যবহারের পর দ্রুত তা ডাস্টবিনে ফেলুন ও হাত ধুয়ে ফেলুন।
৫। সর্দি,কাশি- জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তি ও ভিড় এড়িয়ে চলুন।
৬। শুধুমাত্র নির্ভরযোগ্য সূত্রের খবর বিশ্বাস করুন।
৭। খুব প্রয়োজন না হলে বাসা থেকে বের না হওয়াই ভালো।
৮। নিজের মধ্যে বা অন্য কারো মধ্যে সর্দি-কাশি, জ্বর কিংবা শ্বাস কষ্টের লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
কিভাবে বুঝবেন আপনি করোনা ভাইরাসের ঝুঁকিতে আছেন কি না?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ভাইরাসটির ইনকিউবেশন পিরিয়ড ১৪দিন পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। তবে কিছু কিছু গবেষকের মতে এর স্থায়িত্ব ২৪দিন পর্যন্ত থাকতে পারে।
মানুষের মধ্যে যখন ভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেবে তখন বেশি মানুষকে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকবে তাদের। তবে এমন ধারণাও করা হচ্ছে যে নিজেরা অসুস্থ না থাকার সময়ও সুস্থ মানুষের দেহে ভাইরাস সংক্রমিত করতে পারে মানুষ।
শুরুর দিকের উপসর্গ সাধারণ সর্দিজ্বর এবং ফ্লু’য়ের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ায় রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্থ হওয়া স্বাভাবিক।
সর্দি কাশি বা উপরের কোন লক্ষণ দেখা দিলে করণীয় কি?
সর্ব প্রথম করণীয় কোয়ারেন্টাইন
কোয়ারেন্টাইন কী?
সংক্রমণ ঝুঁকি এড়ানোর উদ্দেশ্যে ব্যক্তির চলাফেরাকে সীমাবদ্ধ করা। কোয়ারেন্টিন তাঁদের জন্যই প্রযোজ্য, যাঁরা রোগে আক্রান্ত হননি কিন্তু রোগীর সংস্পর্শে এসেছেন, রোগের প্রাদুর্ভাবযুক্ত এলাকায় থেকেছেন, অর্থাৎ যাঁরা রোগ ছড়াতে পারেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
সে সুস্থ হতে পারে, আবার নাও পারে, তার মধ্যে হয়তো জীবাণু আছে কিন্তু তার মধ্যে কোনো ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়নি- এমন ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়।
এরপর পরই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া এবং সে অনুযায়ী চলা।
করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে হলে সব থেকে প্রথম প্রয়োজন নিজের ও আশপাশের মানুষের আদর্শ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত ও বিবেক বুদ্ধির সুষ্ঠু ব্যবহার। একই সাথে কিছু সামাজিক মাধ্যমে কিছু গুজব এড়িয়ে চলা উচিৎ। যেমনঃ
মিথ্যা ১ঃ থানকুনি পাতা খেলে করোনা হবে না।
থানকুনি পাতার অনেক ঔষধি গুণ থাকলেও করোনা প্রতিরোধে এখনও এটির কার্যকারিতা নিয়ে কোন নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায় নি।
মিথ্যা ২ঃ মাউথ ওয়াশ দিয়ে কুলি করলে করোনা হবে না।
মাউথ ওয়াশ দিয়ে কুলি করা অবশ্যই ভাল এবং অনেক রোগ প্রতিরোধে এটি সাহায্যও করে কিন্তু নতুন করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে এটির কার্যকারিতা নিয়ে কোন নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায় নি।
মিথ্যা ৩ঃ বেশী বেশী রসুন খেলে করোনা হবে না।
রসুনের অনেক ঔষধি গুণ থাকলেও করোনা প্রতিরোধে এখনও এটির কার্যকারিতা নিয়ে কোন নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায় নি।
করোনাভাইরাস বিষয়ে যোগাযোগ করতে আইইডিসিআরের ফেসবুক পেজ-Iedcr,COVID19 Control Room, এ ছাড়া ই–মেইল ঠিকানা- iedcrcovid19@gmail.com
আইইডিসিআর আরও একটি হটলাইন নম্বর চালু করেছে: ০১৯৪৪৩৩৩২২২। আইইডিসিআরের হটলাইন ছাড়াও করোনা বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কল সেন্টার ১৬২৬৩ ও ৩৩৩–এ যোগাযোগ করা যাবে।
সোর্স: WHO, DW, Prothom ALo