কেমন হয় যদি ঠান্ডা ঠান্ডা একটা সকাল শুরু হয় পাহাড়ের মিঠে রোদে? আপনার ব্যস্ত জীবনের একটি ছুটির সকাল কিন্তু স্মৃতিময় হতে পারে মারায়ন তং চূড়ায়। বান্দরবানের আলিকদম উপজেলার মিরিঞ্জা রেঞ্জের এই পাহাড়টি স্থানীয়দের কাছে মারায়ন তং বা মেরাইথংজাদী নামেই বেশি পরিচিত। ১,৬৪০ ফুট উঁচু এই পাহাড় পাড়ি দিয়ে উপরে উঠতে দেড় থেকে ২ ঘন্টা লাগে। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তা ট্রেকিং করে পৌঁছাবেন মং পাড়ায়। এখানে বটগাছের নিচে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে নিতে দেখতে পারবেন মুরং আদিবাসীদের ব্যস্ততা। জুম চাষ আর দৈনন্দিন জীবনের সরল চালচিত্র দেখে পথের ক্লান্তি ভুলে যাবেন। বিকাল বা সন্ধায় যখন চূড়ায় পৌঁছাবেন, সন্ধ্যাতারা স্বাগত জানাবে আপনাকে। পাহাড়ের উপর একটা মন্দিরে ধ্যানমগ্ন বৌদ্ধ মূর্তির প্রশান্ত পরিবেশ ট্রেকিং করার সব কষ্ট মুছে দেবে নিমিষেই।  

আশেপাশে আর কোনো বড় পাহাড় নেই। তাই নিচে লোকালয় আর মাতামুহুরী নদীর চমৎকার দৃশ্য দেখতে পাবেন। গাছের ডালে হ্যামক ঝুলিয়ে আকাশ ভর্তি তারার মেলা দেখতে পাবেন তাবুর বাইরেই।  

মারায়ন তং যাত্রার প্রস্তুতি 

মারায়ন তং চূড়ায় রাত কাটাতে চাইলে আপনাকে আর্মি ক্যাম্পের অনুমতি নিতে হবে। সেই সাথে লোকাল গাইড আর তাবুও নিতে হবে। নিজের তাবু না থাকলে আপনি আলিকদম বাজারে আবাসিক মোড়ের  হোটেল থেকে তাবু ভাড়া নিতে পারেন। প্রতি রাতের জন্য তাবু ভাড়া সাইজের ভিত্তিতে ২০০-৩০০ টাকা পড়বে। গাইডও নিতে পারবেন এখান থেকেই। রাতে ক্যাম্প ফায়ার করতে চাইলে তার বাজার সদাই সেরে নিতে হবে ট্রেকিং এর আগেই। পাহাড়ের পুরো রাস্তায় আর বাজার বা দোকান নেই। তাই প্রয়োজনীয় খাবার, ওষুধ আর পর্যাপ্ত পানি সাথে নিয়ে ট্রেকিং শুরু করবেন। 

কিভাবে যাবেন? 

মারায়ন তং যেতে হলে আপনাকে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে চলে আসতে হবে আলিকদম। বাস ছাড়া আলিকদম সরাসরি আসার উপায় নেই। যেকোনো সময় সেরা সব বাস পাবেন অনলাইন টিকেটিং প্ল্যাটফর্ম থেকে।  

আলিকদম বাজারের কাছে আবাসিক মোড়ে চলে আসতে হবে। এখান থেকে তাবু, গাইড আর প্রয়োজনীয় খাবার-পানি নিয়ে জীপ বা সিএনজি তে করে চলে আসুন মারায়ন তং পাহাড়ের গোড়ায়। এখানে থেকেই ট্রেকিং শুরু।  

টিপস 

  • আইডি কার্ডের কয়েক কপি সাথে রাখুন।  
  • মারায়ন তং যাওয়ার সময় প্রচুর পানি, গ্লুকোজ, স্যালাইন, শুকনো খাবার আর ওষুধ নিতে ভুলবেন না।  
  • নিজেরা রান্না করতে চাইলে প্রয়োজনীয় উপকরণ নিন। 
  • অনুমতি ছাড়া আদিবাসীদের ছবি তুলবেন না। 
  • পাহাড় চূড়ায় মন্দিরের পবিত্রতা বজায় রাখবেন।  
  • খাবারের প্যাকেট আর সিগারেটের টুকরা যেখানে সেখানে ফেলবেন না। সব আবর্জনা ব্যাগে জমিয়ে পাহাড় থেকে নেমে আসার পর ডাস্টবিনে ফেলুন।